সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫

চলে গেলেন ধর্মেন্দ্র

সোমবার, নভেম্বর ২৪, ২০২৫
চলে গেলেন ধর্মেন্দ্র

বিনোদন ডেস্ক:

শোলে, গয়াল আর আয়ে মিলন কি বেলার মত তুমুল জনপ্রিয় হিন্দি সিনেমার অভিনেতা, বলিউড সুপারস্টার ধর্মেন্দ্র দেওল জীবনের ৯০ বছর পূর্ণ করার মাত্র দুই সপ্তাহ বাকি থাকতে চিরবিদায় নিলেন।

তবে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিনেতার মৃত্যুর খবর এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি।

প্রযোজক পরিচালক করণ জোহর ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর দিয়ে লিখেছেন, “একটি যুগের অবসান…। তিনি ভারতীয় সিনেমার কিংবদন্তি। মানুষ হিসেবেও তিনি ছিলেন সেরা। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির সবার প্রিয় মানুষ ছিলেন তিনি। সবার প্রতি তাঁর ছিল অপরিসীম ভালোবাসা।”

ফুসফুসে কিছু সমস্যা নিয়ে ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে 'হি-ম্যান' খ্যাত অভিনেতা ধর্মেন্দ্র ভর্তি হয়েছিলেন অক্টোবর মাসের শেষ দিকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভারতের মূল ধারার সংবাদমাধ্যমে ধর্মেন্দ্রর মৃত্যু নিয়ে ভুয়া সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে।

তখন তার মেয়ে অভিনেত্রী এশা দেওল বলেছিলেন, “মিডিয়া ভুল খবর ছড়াচ্ছে। আমার বাবার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল এবং তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন। আমাদের পরিবারকে গোপনীয়তা দিন।”

এরপর বাড়ি ফেরেন ধর্মেন্দ্র। সে সময় তাকে নিজে গাড়ি চালিয়ে দেখতে যান তার ‘শোলে’ সিনেমার সহশিল্পী সতীর্থ অমিতাভ বচ্চন। কদিন আগেও একাধিক সংবাদমাধ্যমে এসেছে, ধর্মেন্দ্র বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং সুস্থতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।

এর মধ্যে এল তার মৃত্যুর খবর। টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, সোমবার ধর্মেন্দ্রর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মুম্বাইয়ে ধর্মেন্দ্রর জুহুর বাড়ির বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

সকালে একটি অ্যাম্বুলেন্স তার বাড়ির থেকে বের হতে দেখা যায়। পবনহংস শ্মশানে তার স্ত্রী অভিনেত্রী হেমা মালিনী ও এশা দেওলকে দেখা গেছে। এবং শ্মশানে পৌঁছেছেন অমিতাভ বচ্চন, সেলিম খান, অভিষেক বচ্চন, আমির খান, সালমান খান, সঞ্জয় দত্ত, অক্ষয় কুমার নির্মাতা অনিল শর্মাসহ অনেকে।

ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুতে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে ভারতীয় চলচ্চিত্র অঙ্গনে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং মোদি থেকে বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর, সায়রা বানু, করণ জোহর, কারিনা কাপুর খান, বোমান ইরানি, অনন্যা পান্ডেসহ আরও অনেকে শোক প্রকাশ করেছেন সোশাল মিডিয়ায়।

ধর্মেন্দ্রর পুরো নাম ধর্মেন্দ্র কেওয়াল কৃষাণ দেওল। ১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর পাঞ্জাবের নাসরালিতে তার জন্ম। দ্ররিদ্র কৃষক পরিবারের এই সন্তানটির শৈশব থেকে সিনেমার প্রতি প্রবল টান অনুভব করতেন।১৯৬০ সালে ফিল্মফেয়ার 'ট্যালেন্ট প্রতিযোগিতায় জিতে' পা রাখেন বলিউডে। ১৯৬০ সালে ‘দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে’ সিনেমা দিয়ে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন ধর্মেন্দ্র। সেই থেকে শুরু।

ছয় দশকের বেশি সময় তিনশোর বেশি সিনেমায় অভিনয়ে অসামান্য প্রতিভার ছাপ রেখে গেছেন ধর্মেন্দ্র।

ষাটের দশকের মাঝামাঝিতে ‘ফুল অউর পাথর’ এবং ‘অনুপমা’, ‘আয়ে দিন বাহার কে’ সিনেমায় রোমান্টিক নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করে নামের সঙ্গে ‘নায়ক’ তকমা লাগান ধর্মেন্দ্র।

এছাড়া ‘ধর্ম বীর’ ও ‘হুকুমত’ এর মত সিনেমায় ধর্মেন্দ্র পর্দা কাঁপিয়েছেন অ্যাকশন হিরো হিসেবে। নাম করেছেন ‘বন্দিনী’, 'অন্যপধ', ‘সত্যকাম’, 'আয়া সাওয়ান ঝুমকে', 'ড্রিম গার্ল', 'মেরা গাঁও মেরা দেশ', 'দোস্ত' সহ আরও বহু সিনেমা করেও।

শুরুতে নায়ক হিসেবে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়লেও ধীরে ধীরে কমেডি চরিত্রে অভিনয়ের শক্তিশালী ছাপ রাখেন ধর্মেন্দ্রে। বিশেষ করে হৃষিকেশ মুখার্জি পরিচালতি ‘চুপকে চুপকে’ সিনেমাটি তার ক্যারিয়ারের মাইলফলক হিসেবে ধরা হয়।

তবে ধর্মেন্দ্রর ক্যারিয়ার ঘুরে দাঁড়ায় রমেশ সিপ্পির কালজীয় সিনেমা ‘শোলে’ দিয়ে। ঠাকুরের ডাকে জয় আর বীরু নামের দুই তরুণ মাস্তানের ডাকাত ধরার সিনেমা হয়ে ওঠে বলিউডের ইতিহাস। সিনেমায় ধর্মেন্দ্র ও অমিতাভ অভিনীত জয় ও বীরুর বন্ধুত্ব আজও মনে রেখেছেন দর্শকরা।

২০১২ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘পদ্মভূষণে’ ভূষিত হন তিনি।

ধর্মেন্দ্রকে শেষবার দেখা গেছে ‘তেরি বাতো মে অ্যায়সা উলঝা জিয়া’। ওই সিনেমায় শাহিদ কাপুর এবং কৃতি শ্যানন অভিনয় করেছিলেন।

এছাড়া ধর্মেন্দ্রর শেষ সিনেমা ‘ইক্কিস’ আসছে আগামী মাসের ২৫ তারিখে। শ্রীরাম রাঘবন পরিচালিত সিনেমাটির ট্রেইলার মুক্তি পেয়েছে।

প্রেম করে বিয়ে করার কারণে দীর্ঘদিন চর্চায় ছিলেন ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনী। ১৯৭০ সালে প্রথম দুজন পর্দা ভাগাভাগি করেন ‘তুম হাসিন ম্যায় জাওয়ান’ সিনেমায়। আর তাদের চার হাত এক হয় ১৯৭৯ সালে।

তবে দুই অভিনেতার মন দেওয়া-নেওয়া যখন শুরু, তখন ধর্মেন্দ্র বিবাহিত এবং চার সন্তানের জনক।

হেমা মালিনীকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেলেও প্রথম স্ত্রীর কাছ থেকে তালাক মেলেনি এই নায়কের। অগত্যা বলিউডের এই দুই তারকা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং সেই ধর্মমতেই বিয়ে করেন। ধর্মেন্দ্র ‘দিলওয়ার খান কেওয়াল কৃষ্ণ’ নামে পরিচিত হন। এই দম্পতির দুই মেয়ে এশা দেওল ও অহনা দেওল।

ধর্মেন্দ্র ও হেমামলিনী একসঙ্গে কাজ করেছেন ৩০টির বেশি সিনেমায়। সেগুলোর মধ্যে ‘সীতা অউর গীতা’, ‘ড্রিমগার্ল’, ‘শরিফ বদমাশ’, ‘জুগনু’, ‘দোস্ত’ কালজয়ী হয়।

আর প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌরের সংসারে ধর্মেন্দ্রর চার সন্তান। তারা হলেন সানি দেওল, ববি দেওল, অজিতা দেওল ও বিজিতা দেওল। তবে ধর্মেন্দ্র অনেক বছর ধরে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গেই এক বাড়িতে থাকতেন।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল