রাবিপ্রবি প্রতিনিধি: নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবিপ্রবি) মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে বিজয় র্যালী শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় স্মৃতিস্তম্ভে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আতিয়ার রহমান এর নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এসময় শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স রুমে বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ জুনাইদ কবিরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আতিয়ার রহমান।
আলোচনা অনুষ্ঠানে ‘মহান বিজয় দিবস-২০২৫: সুযোগ ও সম্ভাবনার বাংলাদেশ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন ড. মুহাম্মদ রহিম উদ্দিন। তিনি ১৯৪৭ সালের বিভাজন থেকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক রূপান্তরকে জোরালোভাবে তুলে ধরেন। শিক্ষায় বাজেট বৃদ্ধি, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে বিনিয়োগ, প্রযুক্তি-নির্ভর অর্থনীতি, কৃষিতে ড্রোন প্রযুক্তির বিপ্লবী ব্যবহার, বেসরকারি বিনিয়োগের উত্থান, দেশজ উৎপাদনে স্বনির্ভরতা এবং রপ্তানিমুখী ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বমানের উচ্চতায় তুলে নেওয়ার দিকনির্দেশনা দেন তিনি। দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়তে সৎ নেতৃত্বের অভাবকে তীব্রভাবে সমালোচনা করেন, যা দেশের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মূল কারণ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য ড. মোঃ আতিয়ার রহমান ওসমান হাদীর জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন। তিনি ১৯৪৭ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রূহের মাগফেরাত কামনা করেন। তিনি উন্নত দেশগুলোর সফলতার চিত্র তুলে ধরে শিক্ষার্থীদেরকে দেশসেবায় আত্মনিয়োগের আহ্বান জানান।
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ছাত্র বন্ধুরা তোমরাই আগামীর বাংলাদেশ। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে দাঁড় করাবার জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে যোগ্য ও সৎ নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে। আমরা যেই অর্থে নেতৃত্ব বেছে নেবার কথা বলছি, সেই অর্থে নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার নানা প্রলোভন থাকবে, গাড়ি, বাড়ি, বিদেশে সেটেল হওয়ার প্রলোভন থাকবে। সে সকল প্রলোভনকে জয় করে, সমাজের জন্য ইতিবাচক নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে। সততার ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়ার কোনো জায়গা থাকবে না। যদি তাই হয়, বাংলাদেশ যতবার পথ হারাবার উপলক্ষ পাবে, ততবারই ঘুরে দাঁড়াবার জন্যে যুবকরাই এগিয়ে আসবে।’ এছাড়াও তিনি দেশের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেয়ার জন্য শিক্ষার্থীদেরকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, নিবেদিতপ্রাণ, সৎ, যোগ্য, দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা ও সামাজিক নেতৃত্ব গড়ে তোলার বিষয়ে উৎসাহিত করেন।
মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভা শেষে শারীরিক শিক্ষা বিভাগের আয়োজনে বার্ষিক এ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রীদের আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের মাঝে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয় এবং অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য দুপুরের খাবার পরিবেশন করা হয়। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনিক ভবনসহ সকল হলে আলোকসজ্জা করা হয়।
এমআই