শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

বাঁশবুনিয়া গ্রাম থেকে পটুয়াখালী শহর

বুধবার, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১
বাঁশবুনিয়া গ্রাম থেকে পটুয়াখালী শহর

জেসমিন আরা বেগম :

এক
মাকে অস্বস্তিতে ফেলা
বাঁশবুনিয়া গ্রামের আমজেদ আলী মাস্টারের স্ত্রী মেহের নেগা ওরফে ছোডগেদু যখন জানতে পারলো যে সে আবারো মা হতে চলেছে, তখন তার আর অস্বস্তির সীমা পরিসীমা রইলো না। কি কারণে এই অস্বস্তি? একজন সুস্থ স্বাভাবিক সধবা নারীর মা হতে তো কোনই বাঁধা নেই। সমস্যা অন্যখানে। তার বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে এবং একটি ফুটফুটে নাতনী আছে, যার বয়স ১০ মাস। তার অন্য ছেলেমেয়েরাও বড় বড়। বড় ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে পড়ছে, বড় ছেলের পরে বড় মেয়ে, তারপরে মেজো মেয়ের বিয়ের কথাবার্তা চলছে।
বড় মেয়ের বিয়ের কিছু দিন পরে তার সবচেয়ে ছোট ছেলেটার জন্ম হয়। তখনো পারতে জামাইয়ের সামনে পড়তো না। মেয়ের হাতেই জামাইয়ের জন্য নাস্তা বা অন্যান্য সব খাওয়া দোতলায় পাঠিয়ে দিতো। আগের দিনের শাশুড়িরা জামাইয়ের সামনে এমনিতেই খুব একটা আসতো না, আসলেও এক হাত লম্বা ঘোমটা দিতো। আর গর্ভবতী অবস্থায় জামাইয়ের সামনে পড়া তো কঠিন লজ্জার বিষয়।
মেহের নেগার বর্তমানে ছয় ছেলে তিন মেয়ে, তার আর ছেলেমেয়ের শখ নাই, দরকারও নাই। যারা আছে তারা বেঁচে বর্তে থাক আর লেখাপড়া শিখে মানুষ হোক এটাই তার চাওয়া। তার ছেলেমেয়েরা সবাই দুই বছর পরপর জন্মগ্রহণ করেছে। তার ছোট ছেলেটার বয়স ২২/২৩ মাস, তাই সে মনে করেছিলো আর বাচ্চা হবে না।
মেহের নেগার স্বামী সাত মাইল দূরে অবস্থিত ইটবাড়িয়া গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করেন। এই মুহূর্তে স্বামীর অনুপস্থিতিতে পুকুরঘাটের কাঠের সিড়িতে বসে মুখ ধুতে ধুতে তার অস্বস্তির কথাটা সে তার একমাত্র ছোট জা কালাবরুকে বলল,
- খবিরের মা, আমার শরীরডা বেশি ভালো ঠেকতেছে না। আমার মনে অয় আবার বাচ্চা অইবে।
- ভালো খবর।
- তুমি তো ভালো খবর কইলা, আমার তো শরম করতেছে, এত বড় বড় পোলাপানের সামনে মুখ দেহামু কেমনে! আবার জামাইও আছে।
- বুজান, আমনে কোন চিন্তা কইরেন না। আমার বাপের বাড়ির একজনের তো মায়ের আর ঝিয়ের একলগে বাচ্চা অইলো দুই দুইবার। আপনের তো নাতনীর আগে একজন আর পরে একজন অইবে।
এ কথা শুনে মেহের নেগা ওরফে ছোডগেদু অকুল পাথারে যেন কুল পেলো, মনে একটু সান্ত্বনা পেলো।
অসময়ে পৃথিবীতে আসতে চেয়ে মাকে বিব্রত করা সন্তানটি আর কেউ নয়, আমি।

লেখক পরিচিতি :

জেসমিন আরা বেগম, 
কেমিকৌশলী, ১৩ তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের সদস্য এবং বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী। 
প্রাক্তন উপ-পরিচালক,  বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, (বিপিএটিসি)।


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল