বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

দিন যায় ভাবতে ভাবতে...

শুক্রবার, জুন ৮, ২০১৮
দিন যায় ভাবতে ভাবতে...

রেস্তোরাঁয় যাবেন বলে ঠিক করেছেন, কিন্তু সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না কী খাবেন। ভাবতে গেলেই মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে খাবারের দীর্ঘ তালিকা, আর চোখের সামনে ভেসে ওঠে রেস্তোরাঁকর্মীর বিরস মুখ। শুধু কি খাবারের বেলাতেই এমনটি হয়? এমন অনেকেই আছেন, সকালে গুরুত্বপূর্ণ কোনো বৈঠক। রাতভর তা নিয়ে ভাবছেন—মিটিংয়ে কী হবে, কীভাবে বলব, সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারব তো, বস কী বলবে। এমন ভাবতে ভাবতেই রাত পার! শেষ বেলায় কাজটিই আর ভালোভাবে হয়ে ওঠে না।

এই যেকোনো বিষয়ে অতিরিক্ত চিন্তা কিংবা ভবিষ্যতের বিষয়টি নিয়ে দ্বিধা-সংশয়ের মিশেলে সিদ্ধান্ত না নেওয়ার প্রবণতা, এটা কেন হয়? এককথায় উত্তর হতে পারে—মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে। ২০১৩ সালে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের জার্নাল অব অ্যাবনরমাল সাইকোলজির একটি গবেষণা নিবন্ধ নিয়ে জনপ্রিয় সাময়িকী রিডার্স ডাইজেস্ট অনলাইন সংস্করণে বলেছে, এটা নানা কারণে হতে পারে। কেউ হয়তো খুঁতখুঁতে স্বভাবের মানুষ। প্রতিটি কাজে তিনি নিজের শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করেন, নিখুঁতভাবে কাজটি সম্পন্ন করতে চান। এমন বৈশিষ্ট্যের মানুষ কোনো কাজ করতে গেলে ভাবেন বেশি। আবার মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়েও অনেকে অতিরিক্ত ভাবতে পারেন, বিকল্প নিয়ে ভাবার অভ্যাস যাদের, কোনো বিষয়ে অতিরিক্ত ভাবার প্রবণতা থাকে, অজানা ভয়ের জন্যও মানুষ পরিস্থিতি নিয়ে ভাবতে থাকেন।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের অধ্যাপক তাজুল ইসলাম বলছেন, ‘সব মানুষের মস্তিষ্কের গঠন এবং মনস্তাত্ত্বিক গঠন এক রকম নয়। তাই একেক মানুষ একেকভাবে চিন্তা করেন। কোনো কাজ করার ক্ষেত্রে কিছু বাধ্যতামূলক চিন্তার উদয় হয়। এটা স্বাভাবিক। মস্তিষ্ক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঠিক করে নেয়, কোন কোন বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করবে। অনেকের আবার তা হয় না। কোনো একটি বিষয় নিয়েই অতিরিক্ত চিন্তা করেন।’

আমাদের তো প্রাত্যহিক জীবনে অনেক কাজ করতে হয়। এক বেলা খাবারের জন্য কী খাব, সেটা নিয়ে অবারিত ভাবার সময় আছে? ‘পারফেকশনিস্ট’দের সম্পর্কে তাজুল ইসলামের অভিমত, কোনো একটি কাজ শতভাগ করার মতো সময় আমাদের নেই। এমনটি করতে গেলে হয়তো জীবনে খুব নির্দিষ্ট কিছু কাজ নিয়েই থাকতে হবে বা সম্পন্ন করার সুযোগ হবে। তাই দ্রুত সব কাজ করে ফেলা উচিত।

অতি চিন্তামগ্ন মানুষেরা কীভাবে সেটা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন, তারও কিছু সমাধান জানালেন তাজুল ইসলাম। এ জন্য প্রথমেই নিজেকে বুঝতে হবে। অতি চিন্তা যে একধরনের সমস্যা, তা মেনে নিতে হবে। বুঝতে হবে, কোনো বিষয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করা একধরনের অলসতার লক্ষণ, বিষয়টি অনেকটা জাবর কাটার মতো। তাই অবাঞ্ছিত চিন্তামুখী স্বভাব বদলাতে হবে। হতে হবে সচেতন।

ভাবনার চেয়ে লক্ষ্য অর্জনের বিষয়টিকেই মুখ্য ভাবতে হবে। ভেবে সময় পার না করে কাজটি শেষ করার দিকে মনোযোগী হতে হবে। প্রয়োজনে সময় ভাগ করে নিলে ভালো হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার চেষ্টা করতে হবে। যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ না হয় কিংবা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন না হয়, সেটা স্বাভাবিক হিসেবেই নিতে হবে।

যারা সব সময় নেতিবাচক চিন্তা করেন। তাদের জন্য পরামর্শ হলো, প্রতিনিয়ত ভাবুন নিজের চারপাশটা ইতিবাচক মানুষে ভরা। আবার এমন অনেক মানুষকে দেখা যায়, যারা অফিসের জুনিয়রদের কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট নন। হয়তো ভাবেন, কাজটি নিজে করলেই সবচেয়ে ভালো করতেন। কিন্তু এমনটি তো না-ও হতে পারত, আরও খারাপও হতে পারত। তাই অন্যের কাজকে গুরুত্ব দিতে জানতে হবে। অতিরিক্ত চিন্তা হলে আনন্দের মধ্যে মনোনিবেশ করুন। এ জন্য মেডিটেশন, নাচ, ব্যায়াম, সংগীত যন্ত্র শেখা, সাঁতার, আঁকাসহ আপনার আগ্রহের কোনো বিষয়ে মনোযোগী হোন। দুশ্চিন্তা অনেকটাই কেটে যাবে।


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল