সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

ফেলানী হত্যাকাণ্ডের ১৩ বছর পূর্ণ হলো আজ

রোববার, জানুয়ারী ৭, ২০২৪
ফেলানী হত্যাকাণ্ডের ১৩ বছর পূর্ণ হলো আজ

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানী হত্যাকাণ্ডের ১৩ বছর পুরণ পূর্ণ হলো আজ। ২০১১ সালের আজকের দিনে (৭ জানুয়ারি) ফেলানীকে হত্যা করে কাটাতারে ঝুলিয়ে রাখে মরদেহ। একযুগ পার হলেও বিচারের সুরাহা হয়নি। দ্রুত ন্যায়বিচারের সঙ্গে ক্ষতিপূরণও চান ফেলানীর পরিবার।

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনীটারি গ্রামের নুরুল ইসলামের মেয়ে ফেলানী। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে ভারতের বঙ্গাইগাঁও গ্রাম থেকে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর অনন্তপুর সীমান্তে ৯৪৭নং আন্তর্জাতিক ৩নং সাব-পিলারের পাশ দিয়ে মই বেয়ে কাঁটাতার ডিঙ্গিয়ে বাবার সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল ফেলানী।

এ সময় টহলরত ১৮১ ব্যাটালিয়নের চৌধুরীহাট ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ তাকে গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর প্রায় চার ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলে থাকে ফেলানীর নিথর দেহ। সেই ছবি দেশ-বিদেশের গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নজরে আসে। শুরু হয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনা।

সেসময় ফেলানীর মরদেহ কয়েক ঘণ্টা কাটাতারে ঝুলে থাকার দৃশ্য দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমসহ মানবাধিকার কর্মীদের মাঝে সমালোচনার ঝড় তোলে। পরে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারের বিএসএফর বিশেষ আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার কাজ শুরু হয়। একই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দেয় বিএসএফর বিশেষ আদালত।

পরে বিজিবির আপত্তিতে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনরায় বিচার শুরু হলেও সেখানে খালাস দেয়া হয় অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে। পরে ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই ভারতীয় মানবাধিকার সুরক্ষার (মাসুম) মাধ্যমে ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করেন। পিটিশনের ভিত্তিতে কয়েক দফায় শুনানির দিন পেছালেও এখনো আদালতেই ঝুলে আছে পিটিশনটি। এ অবস্থায় অনেকটা হতাশার মধ্যে থাকলেও মেয়ের হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তিসহ ন্যায় বিচারের আশা করছে তার পরিবার।

ফেলানীর ছোট ভাই জাহান উদ্দিন বলেন, ১৩ বছর হয়ে গেল আমার বড় বোন হত্যার বিচার পাইলাম না। ফেলানী আপা আমাদের যে কত আদর-যত্ন করত ভুলতে পারি না। যার বোন হারিয়েছে তারাই শুধু বলতে পারবে বোন হারানোর কষ্ট। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আকুল আবেদন আমার বোনকে যারা হত্যা করেছে তার যেন সঠিক বিচারটা হয়।

ফেলানীর মা জাহানারা বেগম বলেন, মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে মানবাধিকার সংস্থাসহ বহুজনের কাছে আমার স্বামীসহ গিয়েছি, কিন্তু ১৩ বছরেও বিচার পেলাম না।

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, দুইবার কুচবিহারে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছি। বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের নৃশংসতার বর্ণনা দিয়েছি। তারপরও ন্যায়বিচার পাইনি। ন্যায্য বিচার পাওয়ার জন্য ভারতের সুপ্রিম কোর্টে রিট আবেদন দাখিল করেছি। শুনানি হচ্ছে না। তারপরও আশা ছাড়িনি। প্রতীক্ষায় আছি। আর যত দিন ন্যায়বিচার পাব না, ততদিন বিচার চাইতে থাকবো।

কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর ও ফেলানীর বাবার আইনি সহায়তাকারী অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন জানান, সীমান্তে হত্যার শিকার ফেলানীর মামলাটির শুনানি হওয়া দরকার। শুনানি হলে ঝুলে থাকা বিষয়টি নিষ্পত্তি হতো। যেহেতু দুই রাষ্ট্রের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। শান্তিপূর্ণ বর্ডারের জন্য নিশ্চয় ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট কিছু নির্দেশনা দেবেন। পাশাপাশি ফেলানীর পরিবার ক্ষতিপূরণ পাক এটাই চাওয়া।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল