সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

বাকৃবিতে ফিশারিজ সোসাইটির ৩য় দ্বি-বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

শনিবার, ফেব্রুয়ারী ১৭, ২০২৪
বাকৃবিতে ফিশারিজ সোসাইটির ৩য় দ্বি-বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী, বাকৃবি প্রতিনিধি:

এসডিজি অর্জনে স্মার্ট অ্যাকুয়াকালচার এবং মৎস্য চাষ' প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) দুইদিনব্যাপী ৩য় দ্বি-বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯ টায় বাকৃবির সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে ওই সম্মেলনটির আয়োজন করে যৌথভাবে ফিশারিজ সোসাইটি অব বাংলাদেশ (এফএসবি) ও বাকৃবি মাৎসবিজ্ঞান অনুষদ। এ সম্মেলনে ৩০০ জন অংশগ্রহণ করছে যার মধ্যে ৫ জন বিদেশি অংশগ্রহণকারী রয়েছে। সম্মেলনে  গবেষণা নিবন্ধের  ১৭০ টি  মৌখিক এবং ৭০ টি পোস্টার উপস্থাপন করা হবে।

ফিশারিজ সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম। অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাকৃবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, বাকৃবি মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ.কে.এম নওশাদ আলম, বাংলাদেশ ফিসারিজ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, ডিপার্টমেন্ট অব ফিসারিজের (ডিওএফ) উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ মাৎস গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএসআরআই) পরিচালক ড. মোহসেনা বেগম তনু এবং কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (কেজিএফ) কার্যনির্বাহী পরিচালক ড. নাথু রাম সরকার উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে বক্তারা বাংলাদেশে মৎস্য খাতের অবদান, মৎস্য গবেষণার সফলতা, ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা, মাছের ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্ট, মুক্তাচাষ স¤প্রসারণ এবং জীবন্ত জীন ব্যাংক প্রতিষ্ঠাসহ নানান বিষয় তুলে ধরেন। এছাড়াও এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবন নিয়ে আলোচনায় বলা হয় যে, এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ৮৩টি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। যার মধ্যে ৭১ টি মাছের প্রজনন ও জিন পোল সংরক্ষণের জন্য এবং ১২ টি মুক্ত জলাশয়ে মাছের ব্যবস্থাপনার জন্য। যা দেশে মৎস্য উৎপাদনে বিরাট ভূমিকা রেখে চলেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে নিরাপদ মৎস্য উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলো নিয়ে এসময় আরোও আলোচনা করা হয়।

বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করা এখন সময়ের একটা দাবি। যার গুরুত্ব আমাদের সংবিধানেও দেওয়া আছে। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু পুষ্টির প্রাপ্যতা ২২৫০ কিলো ক্যালোরি। কিন্তু এই পুষ্টির ৭০ ভাগ আসে উদ্ভিজ্জ উপাদান বা কার্বোহাইড্রেট থেকে। একইভাবে বাংলাদেশের মানুষের প্রোটিন প্রাপ্ততার হার মাথাপিছু ৬৬ গ্রাম। এই প্রোটিনেরও ৭০ ভাগ আসে উদ্ভিজ্জ উপাদান থেকে। সে ক্ষেত্রে প্রাণিজ প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করার ক্ষেত্রে মাৎস্য সেক্টর একটি বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। গবাদি পশুর বজ্র্যসহ নানা বজ্র্য পুকুরে মাছের খাদ্য হিসেবে প্রদান করা বন্ধ করতে হবে। এতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও নিরাপদ মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হয় হবে। বর্তমানে মাছেও অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে এগুলো ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিকে ফিশারিজ সেক্টরকে কন্ট্রোল করা না গেলে, অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট কন্ট্রোল করা যাবে না। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপাদান গুলো ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে তাহলে শ্রম ও কম জনবলে দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। স্মার্ট গ্র্যাজুয়েট তৈরীর সাথে সাথে স্মার্ট কৃষক তৈরি করতে হবে যাতে তারা স্মার্ট প্রযুক্তি গুলো ব্যবহার করতে সক্ষম হয়। স্মার্ট এগ্রিকালচার নিশ্চিত করতে না পারলে দেশ ভঙ্গুর হয়ে যাবে।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে যুগান্তকারী সাফল্য দেখিয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাপী অভ্যন্তরীণ উন্মুক্ত জলের মাছ উৎপাদনে তৃতীয় এবং বৈশ্বিক জলজ চাষ উৎপাদনে ৫ম স্থানে রয়েছে। অ্যাকুয়াকালচার চাষ থেকে বাংলাদেশের ৪৭% মাছ  উৎপাদন করা হয়। একটি মাছের সকল অংশ ব্যবহার যোগ্য। বর্তমানে সামুদ্রিক উদ্ভিদ ও মাছ থেকে ক্যান্সার, হৃদরোগ এবং ব্যাথানাশকের মত ঔষুধ উৎপাদন করা হচ্ছে। অনেক মাছের চামড়া থেকে দামি জ্যাকেট উৎপাদন করা হচ্ছে। কিন্তু দেশের জনসংখ্যা ২০৫০ সাল নাগাদ ২০০ মিলিয়নে পৌঁছবে, যার ফলে মাছ চাহিদার সাথে সরবরাহের একটি চাপের সৃষ্টি হবে। তাই সমুদ্রের গভীরের মাছ ধরার জন্য লং লাইন ফিশিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাছের সর্বোচ্চ যোগান নিশ্চিত করতে হবে। সামুদ্রিক উদ্ভিদ ব্যবহার করে হালাল খাবার ও জেলাটিন উৎপাদন নিশ্চিত করার ব্যাপারেও ব্যাপক গবেষণা করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, সমুদ্রের সম্পদকে রক্ষা করতে হলে সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণ কমাতে হবে। অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় যে ২০৫০ সালের মধ্যে সমুদ্রের প্লাস্টিক দূষণ প্রতি মিনিটে ৪ ট্রাক হারে বৃদ্ধি পাবে। যা বর্তমানে প্রতি মিনিটে ১ ট্রাক হারে সমুদ্র দূষণ হয়ে থাকে । লিপস্টিক, ফাউন্ডেশনে এবং অন্যান্য বর্জ্যে উপস্থিত মাইক্রো প্লাস্টিক সমুদ্র দূষিত করার ফলে মাছ মারা যায়। কারণ মাছ এইগুলো হজম করতে পারে না। তাই সমুদ্রে দূষণ কমাতে হবে।

বাংলাদেশে সামুদ্রিক মৎস্য চাষকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। বঙ্গোপসাগরে আমাদের জীবন্ত সম্পদের বিশাল বৈচিত্র্য রয়েছে। এটি ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সুযোগকে প্রসারিত করবে।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল