সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

জাবিতে মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা

শুক্রবার, মার্চ ১৫, ২০২৪
জাবিতে মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা

সৌরভ শুভ, জাবি প্রতিনিধি:

মশার উৎপাতে ব্যাহত হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্যাম্পাসজুড়ে বেড়েছে মাত্রাতিরিক্ত মশার উপদ্রব। সন্ধ্যার পর আবাসিক হলসহ ক্যাম্পাসের সব জনবহুল এলাকায় ঝাঁকে ঝাঁকে মশা ভন ভন করে। দিনের বেলায়ও মশার আক্রমণে অতিষ্ঠ জনজীবন। ফলশ্রুতিতে, শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে গিয়ে দুঃসহ যন্ত্রণার মুখে পড়ছেন। রাতের বেলায় হলে পড়াশোনা ও ঘুমে ব্যাঘাত ঘটছে।

জানা গেছে, আবাসিক হলগুলোর আশপাশের এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানের জলাশয়,  ড্রেন ও ময়লা-আবর্জনা গুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় মশার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। মশকনিধনে বিভিন্ন আবাসিক হলে একাধিকবার স্প্রে করা হলেও মশা কমার পরিবর্তে মশার আক্রমণ বেড়ে যায়। এতে করে, দিনের পর দিন মশার উপদ্রব বেড়েই চলছে। ফলে, মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ মশা নিধনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদক্ষেপ গুলো যথেষ্ট নয়। হলগুলোর আশেপাশের জলাশয়গুলো কচুরিপানা ও ময়লা আবর্জনা জমে মশা তৈরির কারখানায় পরিণহ হয়েছে। মশার এসব অভয়ারণ্য গুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে সারাবছর বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ তাজউদ্দিন আহমেদ হলের ৫১ ব্যাচের আবাসিক ছাত্র রবিউল ইসলাম বলেন, মশার আক্রমণে রুমে ঠিকভাবে পড়াশোনা করতে পারছিনা। ক্যান্টিনে মশার উপদ্রবে খাবার খেতে পারিনা। কয়েল কিংবা অ্যারোসলের ধোঁয়ায় মশা তাড়ানো যাচ্ছে না। এমনকি মশারির ভেতরে গিয়েও মশার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছিনা। হল প্রশাসনের উদ্যোগে মশকনিধনে কয়েকবার অভিযান চালানো হলেও তা যথেষ্ট নয়। মশকনিধন ঔষধ স্প্রে করার পর মনে হয়, মশার আক্রমণ আরো বেড়ে যায়।

বিশিষ্ট কীটতত্ত্ববিদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘ক্যাম্পাসের জলাশয় গুলো মশার অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। জলাশয় পরিষ্কার কমিটিকে আমি বলেছি মশকনিধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের জলাশয়গুলো পরিষ্কার করে গাপ্পি মাছ এবং সাথে অন্য যেকোনো এক প্রজাতির মাছ ছাড়লে মশা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসের ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করতে  হবে। তবে, বায়োডায়ভার্সিটি সংরক্ষণ করে পুরোপুরি মশকনিধন সম্ভব নয়। এধরণের মশাগুলোর রক্ত খাওয়ার প্রয়োজন হলে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে।

ধোঁয়া স্প্রে করলে মশা বেড়ে যায় কেন? জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, মশানিধনে যে ধোঁয়া স্প্রে করা হচ্ছে তার কার্যকারিতা নেই। ধোঁয়াতে মশা কখনোই মরে না। ধোঁয়া হচ্ছে একধরনের ‘আইওয়াশ’। ধোঁয়া স্প্রে না করে এটার টাকা যদি যেসব জায়গায় পানি আছে, পানি পরিষ্কার করে যদি লার্ভিসাইড দেওয়া হয় তাহলে মশাগুলো নিয়ন্ত্রণে আসবে।

মশা দমনে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না কেন? জানতে চাইলে সহকারী রেজিস্ট্রার (এস্টট) আবদুর রহমান বাবুল জানান, মশা নিধনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাত্র পঁচিশ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তা খুবই কম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য। এছাড়া, হল গুলো তাদের নিজস্ব অর্থায়নে মশার ঔষধ দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসকল বিভাগ, সংগঠন থেকে আমাদের চিঠি দিচ্ছে, আমরা সেখানে মশার ঔষধ দিচ্ছি। এর বাইরে আমরা কিছু করতে পারবো না।

তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলো পরিষ্কার করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা লেকগুলো পরিষ্কার করলে মশার উপদ্রব অনেক কমে যাবে। তাছাড়া ঝোপঝাড় পরিষ্কারে আমাদের যে জনবল দেওয়া হয়েছে তারা পুরো ক্যাম্পাসের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। এ বিষয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দেখতে হবে।

জলাশয় পরিষ্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে কিনা? জানতে চাইলে, জলাশয় পরিষ্কার কমিটির সদস্য অধ্যাপক মো.আনোয়ার খসরু পারভেজ বলেন,  ক্যাম্পাস বন্ধ থাকার কারনে এ বিষয়ে এখনো কোনো কাজ শুরু হয়নি। তবে আগামী সোমবার অথবা মঙ্গলবার এ বিষয়ে একটি মিটিং হওয়ার  কথা আছে।


এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল