মোঃ ইমরান মাহমুদ, জামালপুর প্রতিনিধি : ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন আনতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবিপ্রবি) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রুকুনুজ্জামান।
বুধবার (১৪ মে) দুপুরে জামালপুর উন্নয়ন সংঘের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ডিটিআরসিতে পুষ্টিসেবার সহজ প্রাপ্যতায় করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রুকুনুজ্জামান বলেন, খাদ্যের মান, গুন, পরিমান ও পরিমাপ না জেনে খাদ্য খাওয়াটা সম্পূর্ণভাবে অস্বাস্থ্যকর। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যে পরিমান ক্যালোরি খাওয়া দরকার আমরা অধিকাংশ মানুষ না বুঝে তার চেয়ে বেশী খেয়ে থাকি। অনেকেই ক্যালোরি পরিমান খাদ্য খেতেই পারে না।
তিনি আরও বলেন, স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষমাত্রার দুই নম্বর লক্ষ্য অর্থাৎ ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে খাদ্যাভ্যাস ও দৃষ্টিভঙ্গী বদলাতে হবে। আক্ষেপের সাথে তিনি বলেন বাংলাদেশের মানুষ খাদ্যে পুষ্টিমান ভাবারতো দূরের কথা প্রতিদিন সবাই অখাদ্য খেয়ে যাচ্ছে। দুধ, ভাত থেকে শুরু করে সকল প্রকার খাদ্যে রাসায়নিক ও কীটনাশক মিশ্রিত খাদ্য খেয়ে মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে গেইনের চলমার পুষ্টি সেবা কার্যক্রম জোরদার করা এবং সরকারের পুষ্টিনীতিমালা অনুসরণ করা জরুরি।
জামালপুরে বিভিন্ন শিল্প উদ্যোক্তাদের কর্মক্ষেত্রে কর্মরত শ্রমিকদের পুষ্টির মান উন্নয়নে ওয়ার্কফোর্স নিউট্রিশন এ্যালায়েন্স থেকে সহযোগিতা পেতে পারে এবং ফুড সিস্টেম ড্যাসবোর্ড ব্যবহার করে উপকৃত হতে পারে সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়ার উদ্দেশ্যে শ্রম অধিদপ্তর আয়োজনে এবং গেইনের কারগরী সহযোগিতায় ওয়ার্কফোর্স এ্যালায়েন্সের সদস্যরা এ আলোচনা আয়োজন করেন।
জামালপুর কর্মরত বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি শিল্পোদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উন্নয়ন সংঘের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল আলম মোল্লার সভাপতিত্বে ধারণা পত্র উপস্থাপন করেন গেইনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক জি.এম. রেজা সুমন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক ইফতেখার ইউনুছ, জামালপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মঞ্জুরুল কাদের, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জাকিয়া সুলতানা, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক ইবনে ইউসুফ প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম ও গেইনের প্রকল্প কর্মকর্তা আহম্মেদ ইবনে সেলিম। পুষ্টি বিষয়ে ধারণা পত্র উপস্থাপন করেন গেইনের পুষ্টিবিদ দিলারা জাহান প্রমুখ।
সভায় উপস্থিত শিল্পোদ্যোক্তারা তাদের কর্মক্ষেত্রে কর্মী বা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষায় অতিরিক্ত প্রনোদনা বা বাড়তি অর্থ সহায়তা প্রদান করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। উপস্থিত সবাই পুষ্টি সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য গেইনের কাছে প্রশিক্ষণ ও কারিগরী সহায়তা দাবি করেন।
সভায় জামালপুরে সর্ববৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানাসহ পপুলার জুটমিলস, জাবেদ এগ্রো ফুড, এসকে ফুডস, জহুরুল ফিসারিজ, হালিম ট্রেডার্স, শহিদ ডিস্টিবিউটর, ব্র্যাক, সেন্ট্রাল হাসপাতাল, শাহজামাল হাসপাতাল, শতদল, আরসিআই, চায়না মটরস, পেট্রোসেম, এআর মালিক সিডস, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, বাস মালিক সমিতিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।