নিজস্ব প্রতিবেদক:
ব্যাংক খাতের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ছয়টি দুর্বল ইসলামী ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ ২০২৫-এর আওতায় এই প্রক্রিয়া চলছে। জানুয়ারি মাস থেকে এসব ব্যাংকের প্রকৃত আর্থিক অবস্থা যাচাই শুরু হয়েছে, যা এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। চূড়ান্ত মূল্যায়ন প্রতিবেদন হাতে এলেই একীভূতকরণ ও পুনর্গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
যেসব ব্যাংক একীভূত করার পরিকল্পনায় রয়েছে সেগুলো হলো- সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংক। আলোচ্য প্রস্তাবে, তুলনামূলক ভালো অবস্থানে থাকা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে গ্লোবাল ইসলামী ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ফার্স্ট সিকিউরিটি ও ইউনিয়ন ব্যাংক একীভূত করে দুটি ব্যাংক গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঋণ জালিয়াতির কারণে যেসব ব্যাংক টিকতে হিমশিম খাচ্ছে, সেগুলোর পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর প্রকৃত সম্পদ মূল্যায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে দুটি আন্তর্জাতিক অডিট প্রতিষ্ঠানকে সম্পদ যাচাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়—সোশ্যাল ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও আইসিবির সম্পদ মূল্যায়ন করছে আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়াং এবং এক্সিম, ফার্স্ট সিকিউরিটি ও ইউনিয়নের সম্পদ মূল্যায়ন করছে কেপিএমজি।
এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানান, এই ছয়টি ব্যাংককে একীভূত করে সাময়িক সময়ের জন্য সরকারি মালিকানায় নেওয়া হবে এবং মূলধন সহায়তা দিয়ে ব্যাংকগুলোর ভিত্তি মজবুত করা হবে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তাও দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিদেশি কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যাংকগুলোকে আবারও বেসরকারি খাতে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
সম্পদ যাচাইয়ের কাজ শেষ হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে একটি সুপারিশ তৈরি করা হবে, যা ব্যাংক খাত সংকট ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলে উপস্থাপন করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।