নিজস্ব প্রতিবেদক:
বছর না পেরোতেই আবারও বন্যার কবলে ফেনীবাসী। প্লাবিত হয়েছে জেলার বিভিন্ন এলাকা। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আরও ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ নিয়ে অন্তত ১০৯ গ্রাম প্লাবিত। এমন অবস্থায় বন্যা মোকাবিলায় ব্যর্থতায় ক্ষোভ ও উদ্বেগ জানিয়েছে ছাগলনাইয়া সম্মিলিত সেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন ও ছাত্র জনতা। পাশাপাশি ৫টি দাবি জানিয়েছেন তারা।
ছাগলনাইয়া সম্মিলিত সেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে মো: ফয়সাল ভূইয়া জানান, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, গতকয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে ফেনী জেলা শহর ও উপজেলা গুলোতে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ ধরনের বৃষ্টি মৌসুমে স্বাভাবিক বিষয় হলেও নগর ব্যবস্থাপনার অদক্ষতা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার চরম বেহাল দশা, বাঁধ নির্মাণ, নদী খননসহ সাধারণ জনগণকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে ফেলেছে।
আমরা মনে করি, এ পরিস্থিতি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং বছরের পর বছর অপরিকল্পিত ড্রেনেজ, সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব, বাঁধ নির্মাণে দূর্নীতি, প্রসাশনের তদারকি অভাব এবং ঠিকাদার ও দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর অবহেলার ফল।
ফেনীতে ইতিপূর্বে আগে বন্যা হতো না, মানুষও আতঙ্কিত হত না। সাম্প্রতিক গত বছর থেকে কেন হচ্ছে তা নিয়ে গবেষণা করা খুবই জরুরি। অধিকাংশ তথ্যমতে ফেনী নদীর উজান ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থিত। বর্ষাকালে ত্রিপুরায় অতিবৃষ্টি হলে সেই পানি ফেনী নদী দিয়ে সরাসরি বাংলাদেশ অংশে প্রবেশ করে।
এর ফলে ফেনীর নদী গুলোতে দ্রুত পানি ঢুকে পড়ে এবং তাৎক্ষণিকভাবে বন্যা সৃষ্টি হয়। ভারতের পক্ষ থেকে আগাম কোনো সতর্কতা না দেওয়ার কারণে বাংলাদেশ প্রস্তুতির সুযোগও পায় না, যার ফলে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বেড়ে যায়।
২৪ এ বিএসএফ কর্তৃক বল্লামুখা বাঁধ কেটে দেয়ার এক বছর পরও বাঁধটি পুনর্নির্মাণ করতে পারেনি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ফলে বর্ষার এ সময়ে ভারতীয় পানিতে ডুবেছে সীমান্তবর্তী বাংলাদেশিরা। পানিসম্পদ উপদেষ্টাও এর দায় এড়াতে পারেন না।
তাদের দাবি সমূহ হলো-
১. অবিলম্বে বল্লামুখা বাঁধ পুনর্নির্মাণ করে স্থায়ী বন্যা প্রতিরোধ নিশ্চিত করতে হবে।
২. বাঁধ ও পানি নিষ্কাশন কার্যক্রমের দুর্নীতি তদন্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. দ্রুততম সময়ের মধ্যে শহর ও পৌরসভা গুলোতে পানি নিষ্কাশনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪. ড্রেনেজ সিস্টেম সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৫. নগর উন্নয়নের নামে যত্রতত্র নির্মাণকাজ ও বর্জ্য ফেলা বন্ধ এবং প্রশাসনিক তদারকি জোরদার করতে হবে।
এমআই