নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পুনঃ আরোপিত ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক দেশের তৈরি পোশাকশিল্পকে মারাত্মক সংকটে ফেলেছে। এতে করে সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পোশাকের চাহিদা কমতে শুরু করেছে। বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ওয়ালমার্ট ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পোশাকের কিছু ক্রয়াদেশ স্থগিত করেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশের ২,৩৭৭টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৭.৫৪ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, অতিরিক্ত শুল্কের কারণে অর্ডার হ্রাস, শ্রমিক ছাঁটাই ও কর্মসংস্থান সংকটসহ সার্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
পোশাক খাতের নেতারা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষিত নতুন শুল্ক কার্যকর হলে বাংলাদেশের পণ্যের প্রতিযোগিতা ক্ষমতা হারাবে। বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশনের মোহাম্মদ মফিজ উল্লাহ বাবলুর মতে, আগে থেকেই গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল, এখন সেটি ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। এমন উচ্চ শুল্কে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কার্যত অসম্ভব।
প্যাট্রিয়ট ইকো অ্যাপারেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল হোসেন জানান, "ওয়ালমার্টের জন্য ১০ লাখ সাঁতারের পোশাকের একটি অর্ডার স্থগিত করা হয়েছে। ৩৫ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যয় বহন করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।"
বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, "এই শুল্ক শুধু রপ্তানিকারকদের নয়, পুরো সরবরাহ চেইন ও ভোক্তা পর্যায় পর্যন্ত চক্রাকারে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এখন সময় এসেছে মার্কিন বাজার নির্ভরতা কমিয়ে বিকল্প বাজার খোঁজার।"
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার কূটনৈতিকভাবে দ্রুত আলোচনায় না বসলে দেশের প্রধান রপ্তানি খাতেই অচিরেই বড় ধস নামতে পারে। এর প্রভাব পড়বে শ্রমিক মজুরি, সামাজিক স্থিতিশীলতা ও বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহে।
একে