সময় জার্নাল ডেস্ক:
সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণার পরেও দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সহিসংতা অব্যাহত আছে। গত সপ্তাহে সুওয়েইদা প্রদেশে সংখ্যালঘু দ্রুজ সম্প্রদায় সশস্ত্র বেদুইনদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। উভয় পক্ষের বিরুদ্ধেই নৃশংসতার অভিযোগ উঠেছে।
সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা সৈন্য মোতায়েন করেছেন। কিন্তু সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে দ্রুজদের ওপর হামলায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৯ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে।
ইসরায়েল দ্রুজদের প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করে সরকারি বাহিনী ও দামেস্কে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে হামলা করেছে। সারা শনিবার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে সংঘাতের অবসানের জন্য নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছেন।
এই সমঝোতার আওতায় ইসরায়েলের সামরিক হামলা বন্ধের বিষয়টিও আছে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া চুক্তিটি দ্রুজ নাগরিকদের সুরক্ষার শর্তে ইসরায়েল অনুমোদন করেছে।
সরকারি বাহিনীর লড়াইয়ে আরও বেশী লোকের জড়িয়ে পড়া ঠেকাতে চেকপয়েন্ট তৈরি করছে। কিন্তু শনিবারও শহরের ভেতরে গুলির শব্দ শোনা গেছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক সংবাদদাতা বলেছেন, তারা সশস্ত্র ব্যক্তিদের দোকানপাটে লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দিতে দেখেছেন।
শনিবার ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংখ্যালঘুসহ সব সিরিয়ানদের সুরক্ষায় সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের অঙ্গীকারের প্রতি সংশয় ব্যক্ত করেছেন। সুওয়েইদার দ্রুজ সম্প্রদায় শিয়া ইসলাম থেকে উদ্ভূত কিন্তু তাদের স্বতন্ত্র পরিচয় এবং বিশ্বাস রয়েছে।
দামেস্কের বর্তমান সরকারের প্রতি তাদের অনাস্থা রয়েছে। তারা সিরিয়ায় সংখ্যালঘু। প্রতিবেশী ইসরায়েল ও লেবাননেও তারা সংখ্যালঘু।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইসরায়েলের দ্রুজদের সঙ্গে যোগসূত্রতার কারণে সিরিয়ার দ্রুজদের যে কোনো ধরনের ক্ষতি প্রতিরোধে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
গত রোববার সুওয়েইদায় দ্রুজ ও বেদুইনদের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনা সহিংসতায় রূপ নেয়। সে সময় দ্রুজ সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর একজন ব্যবসায়ীকে অপহরণের খবর সামনে আসে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি অব হিউম্যান রাইটস এর তথ্য হিসেবে, এরপর থেকে সহিংসতায় ৯৪০ জন নিহত হয়েছে।
এছাড়া গত শুক্রবার সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত টম বারাক ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন।
তিনি বলেন, আমরা দ্রুজ, বেদুইন ও সুন্নিদের অস্ত্র নামিয়ে ফেলা এবং অন্য সংখ্যালঘু সবাই মিলে প্রতিবেশীদের সাথে শান্তি ও উন্নতির একটি নতুন সিরিয়ান পরিচয় গড়ে তোলার আহবান জানাচ্ছি।
বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য সংবাদদাতা লিনা সিনজাব সিরিয়া থেকে জানিয়েছেন, দ্রুজদের ওপর সহিংসতা পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগে চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক বলেন, তারা হত্যা, নিপীড়নসহ ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের রিপোর্ট পেয়েছেন।
স্থানীয় সশস্ত্র দ্রুজ ও বেদুইন ছাড়াও হামলাকারী অনেকে সরকারি বাহিনীর সদস্য ও অনেকের সরকারের সাথে যোগসূত্র আছে বলে তার বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই রক্তপাত ও সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত। যারা জড়িত তাদের বিচারের আওতায় আনা উচিত।
শনিবার সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন তার সরকার সংখ্যালঘুসহ সবার সুরক্ষায় অঙ্গীকারাবদ্ধ। কেউই জবাবদিহিতার বাইরে থাকবে না।
একে