রাফি উজ্জামান, রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে ডাকা ধর্মঘটের প্রতিবাদে হলগুলোতে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রোববার (২৪ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত পাঁচটি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটাকে ‘বৈষম্যমূলক’ ও ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। যার মধ্যে ছিল- ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে লড়াই হবে একসাথে’।
সরেজমিনে দেখা যায়, নবাব আব্দুল লতিফ হল, শাহ্ মখদুম হল ও সৈয়দ আমীর আলী হলের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলের সামনে মিলিত হন। পরে মিছিল বের করে শাহ্ মখদুম হলের সামনে ব্যাডমিন্টন কোর্টে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। শহীদ শামসুজ্জোহা হল ও মতিহার হল নিজ নিজ হলের সামনেই অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন।
তাদের অভিযোগ, এই ধর্মঘটের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষাসহ স্বাভাবিক একাডেমিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, যা তাঁদের শিক্ষাজীবনকে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলছে। যেকোনো মূল্যে এই কোটা ব্যবস্থা প্রতিহত করার ঘোষণা দেন তারা।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘যে গণ-অভ্যুত্থানে কোটার বিরুদ্ধে লড়াই করে ফ্যাসিবাদকে বিদায় করা হয়েছে, সেই স্বাধীন বাংলাদেশে আবারও আমাদের কোটার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হচ্ছে, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। যখন আমাদের বিজ্ঞান, গবেষণা আর দেশের উন্নয়ন নিয়ে কথা বলার কথা, তখন পোষ্য কোটার মতো একটি মীমাংসিত বিষয় নিয়ে আন্দোলন করতে বাধ্য করা হচ্ছে।’
নবাব আব্দুল লতিফ হলের ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদ বলেন, ‘ছাত্রদের আন্দোলনের মাধ্যমে পোষ্য কোটার কবর রচিত হয়েছিল। এখন কিছু মহল সেই কঙ্কালকে আবার ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনতে চাইছে। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, তারা যদি কোটার পক্ষে ১০০ জনকে জড়ো করে, আমরা ১৭টি হল থেকে ১৭০০ শিক্ষার্থী এর বিরুদ্ধে মাঠে নামব।’
শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক ও শাহ্ মখদুম হল শাখার সভাপতি শামিম পাটোয়ারী বলেন, ‘গত ডিসেম্বরে ছাত্র-আন্দোলনের মুখে পোষ্য কোটার অবসান ঘটেছে। একটি বিশেষ মহল ছাত্র সংসদকে (রাকসু) ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এই মীমাংসিত ইস্যুটিকে আবার সামনে আনছে। শিক্ষার্থীরা এই চক্রান্ত বোঝে। এই ক্যাম্পাসে রাকসু হবে, তবে কোনো পোষ্য কোটা পুনর্বহাল হবে না।’
আন্দোলনে অংশ নেওয়া ফোকলোর বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. সাকিব হোসেন বলেন, ‘পোষ্য কোটা একটি মীমাংসিত বিষয়। এর জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে ফেলার কোনো মানে হয় না। দ্রুত ক্লাস-পরীক্ষা স্বাভাবিক করা না হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’
এর আগে গতকাল শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হাবিবুর রহমান হল এবং রাতে মাদার বখ্শ হলের শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
এমআই