লাইফস্টাইল ডেস্ক:
সারাদিন ডেস্কে বসে কাজ করা, লাঞ্চে ফাস্টফুড, আর বিকেলে চিনি মেশানো চা/কফি— এটিই অসংখ্য মানুষের দৈনন্দিন রুটিন। আর বেশিরভাগ অফিসকর্মীর ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী এই অভ্যাস। চিকিৎসকরা বলছেন, টানা ডেস্কে বসে কাজ করা আর জাঙ্ক ফুড খাওয়ার অভ্যাসে রাশ না টানলে তরুণ কর্মজীবীদের শর্করার ভারসাম্য রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
বর্তমানে শহরের বড় বড় অফিসে কাজ করা কর্মীদের মধ্যে ‘প্রিডায়াবেটিস’ এখন একটি সাধারণ বিষয়। আর এই অবস্থা থেকেই ধীরে ধীরে তৈরি হয় পূর্ণাঙ্গ টাইপ-২ ডায়াবেটিস।
অফিসে টানা বসে থাকায় বাড়ছে শর্করা
সারাদিন কম্পিউটার স্ক্রিনে চোখ রেখে চলে কাজ। ব্যস্ততায় ডেস্ক থেকে ওঠার ফুরসত নেই। নাড়াচাড়া প্রায় বন্ধ। পর্যাপ্ত পানিও খাওয়া হচ্ছে না। স্ন্যাকস বা দুপুরের খাবারে খাচ্ছেন মুখরোচক সব জাঙ্ক ফুড। ব্যস, এসব অভ্যাসেই অফিসে বসে বাড়ছে শর্করা।
এছাড়াও অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং ঘুমের ঘাটতি শরীরে শর্করার ভারসাম্য নষ্ট করছে। ফলে বাড়ছে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের হাত।
কর্মক্ষেত্রে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে করণীয়
ছোট ছোট কিছু অভ্যাসেই বড় পরিবর্তন হয়। টানা বসে অফিসের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে যে পদক্ষেপগুলো নিতে পারেন-
১. মাইক্রো-মুভমেন্ট
প্রতি ৩০–৬০ মিনিট পরপর ৫ মিনিট হাঁটুন বা স্ট্রেচিং করুন। এটি রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং দীর্ঘ সময় বসার পর মেটাবোলিজমের অবনতি আটকাতে সাহায্য করে।
২. পুষ্টিকর ও কম-গ্লাইসেমিক খাবার
প্রসেসড স্ন্যাকসের বদলে স্বাস্থ্যকর খাবার খান। ফাইবার, প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ খাবার খান। এসব খাবার রক্তে শর্করা স্তর স্থিতিশীল রাখে এবং কার্বোহাইড্রেট-সমৃদ্ধ খাবারের কারণে হঠাৎ শর্করা বৃদ্ধিকে রোধ করে।
৩. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা পরিকল্পনা
স্বাস্থ্যসেবাদাতার কাছ থেকে নিয়মিত পরামর্শ নিন। রক্তে গ্লুকোজের দৈনিক স্ব-পরীক্ষা ডায়েট, ব্যায়াম ও ওষুধ পরিবর্তনের জন্য তিনি প্রাথমিক সতর্কতা দিতে পারেন।
৪. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
মানসিক চাপে রক্তে শর্করা বৃদ্ধি পায়। গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন। এতে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং মানসিক সতর্কতা উন্নত হয়।
৫. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
পানি মেটাবোলিজম বাড়ায়, ডিহাইড্রেশন রোধ করে এবং পুরো দিন ধরে শক্তি বজায় রাখে। তাই কাজের যতই ব্যস্ততা থাকুক, পানি পান করতে ভুলবেন না।
কর্মক্ষেত্রেরও আছে ভূমিকা
পুষ্টিবিদরা বলছেন, কেবল ব্যক্তি নয়, প্রতিষ্ঠানকেও ভূমিকা রাখতে হবে। কর্মীদের জন্য ‘হেলদি স্ন্যাকস’, পানি স্টেশন কিংবা ছোট ব্রেকের সুযোগ থাকলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো যায়।
ডেস্ক জব মানেই অসুস্থ জীবন নয়। সঠিক অভ্যাস আর সচেতন থাকলে সুগার নিয়ন্ত্রণে রেখে পূর্ণ উদ্যমে কাজ করা হবে সহজ।
এমআই