শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

রাবিতে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ: ছাত্র শিবিরের আয়োজনে এক মঞ্চে রাকসু, ডাকসু ও চাকসুর ভিপি

শনিবার, নভেম্বর ১৫, ২০২৫
রাবিতে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ: ছাত্র শিবিরের আয়োজনে এক মঞ্চে রাকসু,  ডাকসু ও চাকসুর ভিপি

রাফি উজ্জামান, রাবি প্রতিনিধি :

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রশিবিরের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের  নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় তিন সহস্রাধিক নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল, কলম, গোলাম আজমের বইসহ নানা উপহারসামগ্রী দিয়ে বরণ করে নেয় ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। 

শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯ টায় কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে নবীন বরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়।

নবীন বরণ অনুষ্ঠানে শাখা ছাত্রশিবিরের নেতারা জানান, সবশেষ শাখা ছাত্রশিবিরের আয়োজনে ক্যাম্পাসে ১৯৮২ সালে নবীন বরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। সেদিন অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগ, ছাত্র মৈত্রীসহ কয়েকটি সংগঠনের হামলায় ৪ জন শিবিরকর্মী নিহত হয়। এরপরে বিভিন্ন সময়ে শিবিরের নবীন বরণ স্থানীয় বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠিত হলেও প্রায় চার দশক পরে এ বছর ক্যাম্পাসে আয়োজিত হয়েছে।

রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ উদ্বোধনী বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, '১৯৮২ সালের ১১ মার্চ ছাত্রশিবির রাবি শাখা একটি নবীনবরণ আয়োজন করে। ওই নবীনবরণের পর আমাদের চার ভাই আর ঘরে ফিরে যেতে পারেননি, কারণ ফ্যাসিবাদের দোসরদের আঘাতে আমাদের চারজন ভাই শহীদ হন। তাদেরকে ইসলামি ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে সারা বাংলাদেশে প্রথম শহীদ হিসেবে আজও স্মরণ করা হয়। এই ঘটনার পর থেকে প্রতি বছর ১১ মার্চ ছাত্রশিবির ‘শহীদ দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। এটি ছিল রাবি ছাত্রশিবিরের ওপর জুলুমের ইতিহাস।'

ইসলামি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, 'জুলাইকে নিয়ে একটা শ্রেনী ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। জুলাই ছিল সবার। এখানে একক কোনো নেতা ছিল না। আমাদের যে সাহসী যোদ্ধাগুলো ছিল জুলাইকে নিয়ে ব্যবসা করার কারণে আজকে তারা মানুষের চোখে ভিলেন হয়ে গিয়েছে। জুলাইয়ের ভিত্তি ছিল অন্যায়ের সামনে কখনো মাথা নত না করা। পুরাতন বা নব্য কোনো ফ্যাসিবাদের হাতেই আমরা জুলাইকে বিক্রি হতে দিবনা।'

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে চাকসু  ভিপি রনি বলেন, মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে তারা যদি বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা প্রত্যেক ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সহযোগিতা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তারা আমাদের কাজের প্রতি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

এছাড়া, তিনি রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বের কাজে কর্মকর্তাদের প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করার কথা উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।

ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে মন্তব্য করে বলেন, খুনি হাসিনা ছাত্রশিবিরের উপর বর্বরোচিত নির্যাতন চালিয়েছে এবং সর্বশেষ ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধও করেছিল। কিন্তু ছাত্রশিবির মানুষের হৃদয়ে থেকে গেছে এবং হাসিনা দিল্লিতে পালিয়েছে। ছাত্রশিবির দেশের মানুষের ন্যায়ের পক্ষে লড়ে যাবে।

তিনি আওয়ামী লীগকে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ আখ্যা দিয়ে বলেন, আজকের নবীন বরণ থেকে আমি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, খুনি হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে এবং তাকে ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। তার সহযোগীদেরও বিচার করা উচিত।

তিনি আদালত, সচিবালয় এবং আইন বিভাগে 'ফ্যাসিবাদের দোসর'দের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, যারা মাথাচাড়া দিতে চায়, তাদের প্রতিহত করুন। হাসিনা ও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে।

রাবি শিক্ষার্থীদের ত্যাগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকে রাবি শিক্ষার্থীদের ত্যাগের গল্প শুনে বড় হয়েছি। বিগত ফ্যাসিবাদী সময়ে এই ক্যাম্পাসে গণরুম এবং গেস্ট রুমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতনে করা হতো। শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হতো। কেউ ইসলাম চর্চা করলে তাকে ট্যাগিং করা হতো।

এসময় রাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও রাকসু ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদের  সভাপতিত্বে ও ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সালের  সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাইন উদ্দিন খান । এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলে প্রধান আলোচক, ইসলামি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ঢাকসু ভিপি সাদেক কায়েম, চাকসু ভিপি ইব্রাহিম রনি, কলা অনুষদের ডিনস বেলাল হোসেন,রাবি ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি আব্দুল মোহাইমিনসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল