জাকারিয়া শেখ, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফজলুল করীম বলেছেন, “স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আমরা আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও বিএনপির শাসন দেখেছি। তাদের শাসনামলে হয়েছে অনিয়ম, দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, দখলবাজিসহ হাজারো লুটপাট এবং অর্থ পাচারের মহোৎসব। শুধু আগের ফ্যাসিস্ট শাসনামলেই দেশ থেকে ৪৮ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে।”
শনিবার বিকেলে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম জেলা শাখা আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মুফতি ফজলুল করীম বলেন, “ক্ষমতাসীনরা বিশ্বজুড়ে অট্টালিকা বানিয়েছে এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাহাড় সমান টাকা জমা করেছে। আমরা এই সকল দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ ভারতের সাথে যে সব গোলামী চুক্তি করেছে তা বাতিল করতে হবে। আমরা ভারতের দালালি মানব না। যারা ভারতের সাথে আতাত করে ক্ষমতায় আসতে চায় তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে এবং আওয়ামী লীগের মতো দেশত্যাগে বাধ্য করা হবে।”
মুফতি ফজলুল করীম বলেন, “জুলাই আন্দোলনের যুদ্ধ শেষ নয়, কেবল শুরু হয়েছে। আমরা রক্ত দিয়ে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলাম — যে দেশ হবে দুর্নীতি ও বৈষম্যহীন, মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত এবং মানবিক কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত।”
তিনি আরো বলেন, “একটি দল ক্ষমতার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং ইতিমধ্যেই তাদের মধ্যে দখলবাজী, চাঁদাবাজী আর খুনাখুনি শুরু হয়েছে। তাদের এই লুটপাটের কারণে জনগণ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সময় এসেছে সকল ইসলামী দলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৈষম্যহীন কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার।”
পরে তিনি কুড়িগ্রামের চারটি সংসদীয় আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ঘোষণা করেন। কুড়িগ্রাম-১ আসনে আলহাজ্ব রাইসুল বারী রনি, কুড়িগ্রাম-২ আসনে আলহাজ্ব নুর বখত, কুড়িগ্রাম-৩ আসনে সাবেক এমপি ডা. আক্কাস আলী এবং কুড়িগ্রাম-৪ আসনে আলহাজ্ব হাফিজুর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়। শ্লোগান দেওয়া হয় — “কথায় কাজে মিল পাই, হাত ফাঁকা চরমোনাই”।
কুড়িগ্রাম জেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান এবং রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ইসলামী আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাফিজুর রহমান।
এমআই