বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

মালিকানা দ্বন্দ্বে জামায়াত-বিএনপির ৪ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার, জামায়াতের দাবি রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয়

মঙ্গলবার, জুলাই ২৯, ২০২৫
মালিকানা দ্বন্দ্বে জামায়াত-বিএনপির ৪ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার, জামায়াতের দাবি রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয়

ইসাহাক আলী, নাটোর প্রতিনিধি:

নাটোরের বড়াইগ্রামে জমির মালিাকানা নিয়ে দ্বন্দ্বে ১০টি দোকানে তালা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।  মঙ্গলবার দুপুরে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে সোমবার সন্ধ্যা উপজেলার আহম্মেদপুর বাজারে এই ঘটনা ঘটে। এদিকে জমি জমার দ্বন্দ্ব হলেও ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চাঁদাবাজির মামলা ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে জামায়াতকে হাইলাইট করে সংবাদ প্রচারের পর সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ জামাতে ইসলামী নাটোর জেলা শাখা।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন-উপজেলার আহম্মেদপুর গ্রামের মৃত বন্দে আলী মিয়ার ছেলে মুজিবুর রহমান (৬৫), তার ছেলে জোয়াড়ী ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি রুহুল আমিন (৪৫), তার ভাই বিএনপির কর্মী হায়দার আলী (৪৮) ও জামায়াত কর্মী আজিমউদ্দিন (৪০)।

স্থানীয়রা জানান, আহম্মেদপুর গ্রামের মুজিবুর রহমানের সাথে প্রতিপক্ষ নওপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম, কোরবান আলী, শাহ আলম ও মোতালেব হোসেনের ৬ শতাংশ জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এ ঘটনায় আদালতে মামলাও চলমান রয়েছে। 

এদিকে, বিষয়টি সমাধানের জন্য স্থানীয়ভাবেও একাধিক সালিশ বৈঠক হয়েছে। সোমবার এ বিষয়ে সালিশ বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহুর্তে তা বন্ধ হয়ে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মুজিবুর রহমানের ছেলেরা বিবাদমান জমিতে থাকা ১০ টি দোকানে তালা মেরে দেন। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চারজনকে আটক করেন এবং তালা খুলে দেন। 

নওপাড়া গ্রামের শাহ আলম বলেন, ‘আমরা ক্রয় সুত্রে এ জমির মালিক। জমি কিনে সেখানে আমরা দোকান করেছি। কিন্তু তারা এ জমি তাদের বলে দাবি করে দোকানে তালা দিয়েছে। পরে বিকেলে সেনাবাহিনী ও বড়াইগ্রাম থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। 

অপর ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দোকানের দখল না পেয়ে তারা আমাদের কাছে মাসিক ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা চেয়েছে। আমরা তা দিতে রাজি না হওয়ায় তারা দোকানে তালা দিয়েছে। 

এদিকে গ্রেপ্তারের আগে জামায়াত নেতা রুহুল আমিন বলেন, ‘ওই জমি আমাদের। তারা ২২ শতক জমি কিনেছে, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ৬ শতকসহ পুরো জমি দখল করে রেখেছেন। আমাদের অংশের জমি ছাড়তে বললেও তারা ছাড়ছেন না। আমরা জমি না ছাড়লে দোকানের ভাড়ার টাকা দিতে বলেছিলাম, চাঁদা নয়। এ বিষয়ে আমরা আদালতে মামলা করেছি। তবে এভাবে দোকানে তালা দেওয়া আমাদের ঠিক হয়নি।’

বিএনপি কর্মী হায়দার আলী বলেন, ‘উভয় পক্ষের সঙ্গে জমির সমস্যাটি সমাধানের জন্য স্থানীয় জামায়াত ও বিএনপির কয়েকজন নেতার নেতৃত্ব একটি কমিটি করা হয়। কিন্তু তারা (দোকানিরা) এ কমিটির কথাও মানেন না। তাই আমরা আমাদের জমি দখল করেছি।’

বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে দোকানে তালা দেয়া ও চাঁদা দাবির অভিযোগে থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

এদিকে জমি জমার দ্বন্দ্ব হলেও সেটাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার জন্য জামায়াতকে হাইলাইট করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ করার প্রতিবাদ জানিয়েছে জায়ামাতে ইসলামী। মঙ্গলবার বিকেলে শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, এটি কোন রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয় তবুও এটাকে রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। জমিজমার দ্বন্দ্বে স্থানীয় লোকজন ও বিভিন্ন দলের মানুষরা জড়িত হলেও শুধুমাত্র জামায়াতকে হাইলাইট করে সংবাদ প্রচার করে জামায়াতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মান ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। জামায়াত কোন চাঁদাবাজির ঘটনায় জড়িত না হলেও এই সংবাদ এর প্রেক্ষিতে সারাদেশে ব্যাপকভাবে জামায়াতের ইমেজকে ক্ষুন্ন করা হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ এই ঘটনার নিন্দা জানান ও ভবিষ্যতে সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে আরও যত্নবান হওয়ার জন্য সংবাদ কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। জামায়াতের  জেলা আমির ডঃ মীর নুরুল ইসলাম বলেন, তবুও অভ্যন্তরীণভাবে আমরা একটি কমিটি করেছি এই কমিটি তদন্ত করে দেখবে যদি এ ধরনের কোন ঘটনার সাথে জামায়াত কর্মীরা জড়িত থাকে তাদেরকে অবশ্যই দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। সে ব্যাপারে দলের কেন্দ্রীয় আমির ও সংগঠনের সরাসরি নির্দেশনা রয়েছে। তবে পারিবারিক একটি দ্বন্দ্বকে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব রূপ দিয়ে সাংগঠনিক পরিচয় ব্যবহার করে সংবাদ প্রচার করা দুঃখজনক।

সংবাদ সম্মেলনে নাটোর জেলা জামায়াতের আমির ডক্টর মীর নুরুল ইসলাম, সেক্রেটারি অধ্যাপক সাদেকুর রহমান, নায়েবে আমির অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন খান, সহকারি সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল হাকিম ও আতিকুল ইসলাম রাসেল উপস্থিত ছিলেন।

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল