নিজস্ব প্রতিবেদক:
মুক্তিযুদ্ধের অপারেশন কিলোফ্লাইটের অন্যতম বৈমানিক ক্যাপ্টেন (অব.) সাহাবউদ্দিন আহমেদ বীর উত্তম আর নেই। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে রাজধানীর গুলশানের নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুকলে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
ক্যাপ্টেন (অব.) আলমগীর সাত্তার বীর প্রতীক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি তার স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়ে রেখে গেছেন।
আলমগীর সাত্তার জানান, আজ সকালে ঘুমের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়েছে। সকালে বিছানা না ছাড়ায় পরিবারের সদস্যরা তাকে ডাকতে যান। কিন্তু তাকে নিথর অবস্থায় পাওয়া যাওয়ায় চিকিৎসককে ডাকা হয়। সকাল ৮টার দিকে চিকিৎসক এসে জানান যে তিনি মারা গেছেন।
তিনি আরও জানান, আজ বাদ জোহর গুলশানের আজাদ মসজিদে সাহাবউদ্দিন আহমেদ প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিকেল পৌনে ৫টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বিমানবাহিনীর ঘাঁটি বাশারে তার দ্বিতীয় জানাজা ও রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হবে। এরপর দাফনের জন্য তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ফরিদপুরে।
সাহাবউদ্দিন আহমেদের জন্ম ফরিদপুর জেলা শহরের চরকমলাপুরে। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সাহাবউদ্দিন আহমেদ পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সে (পিআইএ) বৈমানিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে যুদ্ধে যোগদানের পর তিনি স্থল যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। হবিগঞ্জের শাহজিবাজারের টারবাইন বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিস্ফোরণের অপারেশনেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। বেসামরিক পাইলট হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ বিমানবাহিনী গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন তিনি।
অপারেশন কিলোফ্লাইটের সর্বমোট ৮৫টি অপারেশনের মধ্যে ১২টি অপারেশনে ছিলেন ক্যাপ্টেন সাহাবউদ্দিন আহমেদ। তিনি প্রথম হামলায় অংশ নেন ৬ ডিসেম্বর। এদিন ক্যাপ্টেন সাহাবউদ্দিন আহমেদ এবং ফ্লাইং অফিসার বদরুল আলম অ্যালুয়েট হেলিকপ্টারে নিয়ে সিলেট, মৌলভীবাজার, শেরপুর ও সাদিপুরের দুটি ফেরীঘাটে থাকা পাকিস্তানি অবস্থান ধ্বংস করেন।
৭ ডিসেম্বর ক্যাপ্টেন সাহাবউদ্দিন আহমেদ অ্যালুয়েট হেলিকপ্টারে করে সিলেটের শমসেরপুরে অপারেশন চালানোর সময় পাল্টা হামলার মুখে পড়েন। তবে তার বুদ্ধিদীপ্ততায় প্রাণে বেঁচে যান মুক্তিযোদ্ধারা। ৮ ডিসেম্বর সিলেট সার্কিট হাউসসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় অপারেশন চালান সাহাবউদ্দিন আহমেদ।
এমআই