বেরোবি প্রতিনিধি :
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর-এ শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য “Peer to Peer Orientation Learning Session on Social Emotional Wellbeing (SEW)” শীর্ষক লার্নিং সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনতা স্মারক মাঠে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) এবং ইউনেস্কো বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের জন্য একটি গর্বের বিষয়। জুলাই আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা অনেক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য গিয়েছে। সেই কঠিন পরিস্থিতি এখনো শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বয়ে বেড়াচ্ছে। প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব জুলাই আন্দোলনে আবু সাঈদসহ সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, নিজেকে জানতে হবে। লক্ষ্য নির্ধারণ করে নিজের ভালো গুণগুলো কাজে লাগাতে হবে। সব সময় পরিবারের সদস্যদের সাথে সম্পর্ক ভালো রাখতে হবে বিশেষ করে মা-বাবার সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। নিজের জন্য যে কাজ বা কথা অপছন্দ মনে হবে অপরের জন্যও সেই কথা বা কাজ না করা। তাহলেই মানসিকভাবে সুস্থ থাকা সম্ভব। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে ইমোশনাল স্কিলস উন্নত করা উচিত, যাতে ইমোশনকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।"
সভাপতির বক্তব্যে বেরোবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শওকাত আলী বলেন, “শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করার জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থতা প্রয়োজন। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য মেডিকেল সেন্টারে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে কাউন্সিলিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য বলেন, ব্যর্থতাকে সফলতায় পরিণত করার জন্য মনোবল অর্জন করতে হবে। জীবনের সঠিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য এই ধরনের সেশন শিক্ষার্থীদেরকে যথাযথ দিক নির্দেশনা প্রদান করবে। এ ধরনের লার্নিং সেশন আয়োজনের জন্য ইউজিসি ও ইউনেস্কো বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান উপাচার্য।"
উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইউজিসি’র আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিভাগের পরিচালক জেসমিন পারভিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তানভীর রহমান এবং ইউনেস্কো বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি শওকত ইসলাম। বক্তরা বলেন, “সোস্যাল ইমোশনাল ওয়েলবিং একটি পাইলট প্রজেক্ট যা বাংলাদেশের ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এটার পূর্বে Rapid need Assesment কনসেপটি অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ ও মানসিক স্বাস্থ্যের গবেষকগণ জড়িত ছিলেন। এই গবেষণায় উঠে এসেছে যে, জুলাই ’২৪ পরবর্তীতে আমাদের ৬৪% শিক্ষার্থী মানসিক স্বাস্থের সমস্যায় ভূগছেন। সেজন্য শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা জরুরী এবং অন্য সহপাঠীর প্রতি সহানুভূতি ও সমমর্মিতা আবশ্যক।"
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ ইলিয়াছ প্রামানিক, প্রক্টর ড. মোঃ ফেরদৌস রহমান ও বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুর রহমান সুমন। দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত সেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ অংশ নেন।
এমআই