শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

তারুণ্যের ভাষায় স্বাধীনতা

সোমবার, মার্চ ১, ২০২১
তারুণ্যের ভাষায় স্বাধীনতা

যেখানে নিজের ইচ্ছে আর বিবেকের সংমিশ্রণ হয়, সেখানেই বহিঃপ্রকাশ ঘটে স্বাধীনতার। স্বাধীনতা ও বিজয় অর্জনের মাধ্যমে বাঙ্গালি পেয়েছে নির্দিষ্ট ভূখন্ড, নির্দিষ্ট রাষ্ট্র, মাতৃভাষার অধিকার, ও বিশ্বের মানচিত্রে মাথা তুলে দাঁড়াবার ঠায়। তবে স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক হওয়াটাই কি কেবল স্বাধীনতার মানদণ্ড! হয়তোবা না। স্বাধীনতার সংজ্ঞা একেক জনের কাছে একেক রকম। তরুণ-তরুণীরা কীভাবে দেখে স্বাধীনতা বিষয়টিকে? আসুন জেনে নেয়া যাক তাদের ভাষায়।

নিজের অধিকারের মর্যাদা পাওয়াটাই স্বাধীনতা
কবি শামসুর রহমানের 'স্বাধীনতা তুমি' কবিতার মতো সামাজিক চুক্তিতে আবদ্ধ রাষ্ট্রীয় জীবনে চূড়ান্ত স্বাধীনতা চর্চার সুযোগ নেই। স্বাধীনতা নামক অবিনাশী গানের মতো আমাদের নাগরিক জীবনে স্বাধীনতার সীমা আছে, সীমা আছে ব্যক্তিগত স্পেইস তৈরির ধারণার মধ্যেও। রাষ্ট্রীয়ভাবে আমার দেশ সাম্রাজ্যবাদী সকল রাষ্ট্রগুলোর হস্তক্ষেপের বাইরে থাকবে ও পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারিত হবে অভ্যন্তরীণ নীতির আলোকে এমনটাই স্বাধীনতার অর্থ। তবে ব্যক্তিজীবনে স্বাধীনতা বলতে বুঝি, সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল্যবোধকে আঘাত না করে, ধর্মীয় মূল্যবোধের বিরুদ্ধে না গিয়ে, রাষ্ট্রীয় মূল্যবোধকে প্রভাবিত না করে, নিজের জীবনটাকে নিজের মতো চালনা করতে পারাকে। আমার মতপ্রকাশের অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার আর নিরাপত্তার অধিকারকে সম্মান জানাবে রাষ্ট্র- স্বাধীনতা বলতে আমি এটাও বুঝি।
                                                                                         মাহবুবুর রহমান মাসুম, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিজে নিতে পারাটাই স্বাধীনতা
১৯৭১ এ স্বাধীনতা লাভের মাধ্যমে আমরা পাই গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ। পাই বাংলায় কথা বলার স্বাধীনতা। কিন্তু ঠিক কতটা স্বাধীনতা আমরা ব্যক্তিজীবনে পাই? কতটা স্বাধীনতা আমরা নিজের ইচ্ছে পূরণে কিংবা মত প্রকাশে পাই? আমার কাছে স্বাধীনতা মানে উলঙ্গ হয়ে রাস্তায় হাঁটা নয়, আবার মেয়ে বলে সারাদিন ঘরের কোণে পড়ে থাকাও নয়। আমার কাছে স্বাধীনতা মানে স্কুলের প্রোগ্রামে নিজের পছন্দের বিষয়ে অংশ নেয়া, পাঠ্য বইয়ের বাইরেও পছন্দমত বই পড়া, নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারা; যেমনঃ মাধ্যমিকের পর সাইন্স ছেড়ে আর্টস পড়ার সিদ্ধান্ত ও এইচএসসির পর নিজের পছন্দের বিষয়ে পড়তে পারাকে আমি ব্যক্তিস্বাধীনতা বলি। কিন্তু আমাদের দেশের বেশিরভাগ মা-বাবাই তাদের সন্তানের ইচ্ছের গুরুত্ব না দিয়ে নিজেদের পূরণ না হওয়া শখ বা ইচ্ছেগুলো সন্তানদের উপর চাপিয়ে দেন।

                                                                                কাজী রাফিদা ফারিহা, শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়


স্বাধীনতা মানে নিজস্ব চিন্তাধারার সুন্দরতম বহিঃপ্রকাশ
আমার কাছে স্বাধীনতা মানে প্রত্যেকটা মানুষের যেকোনো বিষয়ে নিয়ে বলতে পারার এবং যেকোনো কাজ করতে পারার স্বাধীনতা। তবে অবশ্যই আইনের অনুশাসন আর অন্যের স্বাধীনতা খর্ব না করার বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। স্বাধীনতা মানে নিজের চিন্তাধারা গুলোকে সুন্দরভাবে প্রকাশ করার সুযোগ। স্বাধীনতা মানে প্রত্যেকটা মানুষের সোশ্যাল মিডিয়ায় মতামত প্রকাশের সুযোগ। মানুষ তার যোগ্যতা অনুযায়ী উপযুক্ত কাজ করতে পারলেই স্বাধীনতা উপলব্ধি হয়। হোক সে নারী কিংবা পুরুষ, সমান অধিকার ও সম্মান নিয়ে এগিয়ে চলাটাই স্বাধীনতা। নিজের স্বপ্ন পূরণে বাধা না পাওয়া, নিরাপত্তার সাথে চলা আর নির্ভয়ে বাঁচাটাই আমার কাছে স্বাধীনতা।

                                                                   বিশাল মজুমদার জয়, শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়


স্ব-অধীনতাই স্বাধীনতা
স্বাধীনতা শব্দটির শব্দাংশ বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায় স্ব-অধীনতা। অর্থাৎ, নিজের অধীনে চলা। মোদ্দা কথা, যে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি সে স্বাধীনতা লাভ করেনি। মূলত স্বাধীনতা বলতে আমরা বাক স্বাধীনতা কিংবা মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বুঝি। স্বাধীনতার বিশ্বজনীন ভাষাই হলো মানবিক মুক্তি। বর্তমানে এই মানবিক মুক্তির বিপর্যয় দৃশ্যমান বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রে। বেশিরভাগ নারীকেই জীবন পার করে দিতে হয় অন্যের ইচ্ছেনুযায়ী। পড়াশোনায় ভালো থাকার পরেও খর্ব করা হয় পড়ার অধিকার। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বাইরে বেরিয়ে উপার্জন করার অধিকার পান না সিংহভাগ নারী। বাঙ্গালি স্বাধীন জাতি হলেও পূর্ণাঙ্গরুপে স্বাধীনতা পেতে প্রতিটি বাঙ্গালির হাটতে হবে আরো অনেকটা পথ।

                                                             সিদরাত জাহান মনিরা, শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়


খাদিজা খানম ঊর্মি,
শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
ইমেইল- khadijakhanom5499@gmail.com



সময় জার্নাল/


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল